ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে মানব জাতির প্রধান অস্ত্র এন্টিবায়োটিক। অতিরিক্ত, অপর্যাপ্ত ও অযৌক্তিক এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু উদ্ভব হচ্ছে। এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু ব্যক্তির জন্য প্রাণঘাতী হওয়া ছাড়াও সমাজে ব্যাপক প্রাদুর্ভাব সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিরোধ ক্ষমতা কেন দ্রুত বিস্তার লাভ করে? মানুষ, পশুপাখি সবার শরীরেই অণুজীব বাস করে। অহেতুক এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করলে ওই সমস্ত অণুজীব অধিকাংশই মারা যায়, কিন্তু দুই একটি যা বেঁচে থাকে তারা ঐ এন্টিবায়োটিকটিকে অকার্যকর করার জন্য বিশেষ জেনেটিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বিশেষ কায়দা বা রাসায়নিক অণু তৈয়ার করে। ফলে ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিকটির প্রতি বেঁচে যাওয়া অণুজীব প্রতিরোধী হয়ে যায়।এ বিষয়টিকে ‘Selection Pressure’ বলে।
অণুজীব অতি দ্রুত বংশ বিস্তার করে। একটি অণুজীব এক দিনে নিদেন পক্ষে দশ হাজার কোটি সংখ্যক নতুন প্রজন্ম উৎপন্ন করে থাকে। তাই প্রতিরোধী অণুজীবের বিস্তারও দ্রুতই ঘটে আসছে।
সারাবিশ্ব জুড়ে Antimicrobial Resistance একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে এবং জীবাণুসমূহ এন্টিবায়োটিকের প্রতি তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেই চলেছে। জীবাণুসমূহ বহু প্রকার এন্টিবায়োটিকের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে পড়েছে। ফলশ্রুতিতে কম বা বেশি দামি সকল প্রকার এন্টিবায়োটিক সংক্রমণ চিকিৎসায় অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে; বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এ ধরনের রোগজীবাণু ব্যক্তির জন্য প্রাণঘাতী হওয়া ছাড়াও সমাজে ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের সৃষ্টি করতে পারে। উল্লেখ্য যে, World Health Assembly, ২০১৫-তে ” Antimicrobial Resistance Preparedness, Surveillance & Response” Agenda হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তাছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ পলিসি ও নির্দেশিকা প্রণয়ন-পূর্বক এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের উপর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে ইতিমধ্যেই কৌশলপত্র, কর্মপরিকল্পনা, ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন ইত্যাদি প্রণয়ন করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতি বছরের মতো এ বছর ১২ থেকে ১৮ই নভেম্বর এন্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ পালন করছে। এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স সহনীয় মাত্রায় আনয়নের জন্য চিকিৎসকসহ সকল পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করা অতীব প্রয়োজন।
“বিশ্ব এন্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ (১২ থেকে ১৮ই নভেম্বর) ২০১৮”-এর প্রতিপাদ্য বিষয়-অযথা আন্টিবায়োটিক সেবন ক্ষতির কারণ, বিনা প্রেসক্রিপশনে তা কিনতে বারণ। সপ্তাহকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং দেশীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে, বিভাগীয় পর্যায়ে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একযোগে সপ্তাহটি পালন করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুর বিরূপ প্রভাব: স্বল্প সময়ে স্বল্প ব্যয়ে সংক্রমণ চিকিৎসা হয় না। বিশেষ করে শল্য চিকিৎসার সফলতা অর্জন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় উপার্জন ব্যাহত হয় এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস পায়। চিকিৎসা ব্যয় বহু গুণ বেড়ে যায়। ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পরে। জিডিপি (Gross Domestic Product) ১ শতাংশের অধিক কমে যায় এবং স্বাস্থ্য সেবার পরোক্ষ খরচ প্রত্যক্ষ খরচের তিন গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায় বলে অনুমান করা হয়। কার্যকরি নতুন ওষুধ উৎপাদন, সময় সাপেক্ষ বিধায় অনেক সময় সঙ্কট দেখা দেয়।
এ পরিস্থিতির পেছনে মানব সৃষ্ট কিছু কীর্তি কলাপ সক্রিয় ভূমিকা রাখে: নিজে নিজে এন্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধ সেবন করা। দরকার না থাকার পরেও এন্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধের ব্যবস্থা পত্র দেয়া। সঠিক সংক্রমণে সঠিক এন্টিবায়োটিক ব্যবহার না করা। সঠিক মাত্রা ও সঠিক সময়কাল অনুসরণ না করে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা। দামি ও বাজারে নতুন আসা এন্টিবায়োটিক ব্যবস্থাপত্রে লিখার বিশেষ প্রবণতা বা স্টাইল। পশু পালন কাজে পশুতে সংক্রমণ চিকিৎসা বা প্রতিরোধ এমনকি দৈহিক বৃদ্ধির জন্যও এন্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়। হাঁস মুরগি ও মৎস্য খামার গুলোতেও উপরে উল্লিখিত উদ্দেশ্যে এন্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়। মানুষ, পশু পাখি সকলের বর্জ্যের মাধ্যমে নিঃসরিত হয়ে এন্টিবায়োটিক পরিবেশের উপাদানের সঙ্গে মিশে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী ভূমিকা পালন করছে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক কর্ম কৌশল প্রণয়ন করেছে “এএমআর” এর উদ্ভব ও বিস্তার যেন ধীর গতিতে হয় সে লক্ষ্য নিয়ে কর্মকাণ্ড-সংক্রমণের হার ও বিস্তার কমানো, উপযুক্ত এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্রাপ্তির উন্নতি সাধন, এন্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহারের উন্নতি সাধন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনা জোরদারকরন এবং অতন্দ্র তত্ত্বাবধান (Surveillance) সক্ষমতা বাড়ানো, বিধি-বিধান প্রয়োগ, নতুন ওষুধ ও টিকা উদ্ভাবনে উৎসাহ দান।
সিডিসি/স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, এ যাবৎ কি কি করেছে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে “এআরসি” কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। খসড়া জাতীয় কর্ম কৌশল প্রণয়ন করে তার আলোকে নিম্নের কমিটি সমূহের অনুমোদন নেয়া হয়েছে। জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি (সভাপতি-মন্ত্রী), জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি (সভাপতি- মহাপরিচালক), কোর ওয়ার্কিং গ্রুপ (সভাপতি- পরিচালক, রোগ নিয়ন্ত্রণ), জাতীয় কর্ম কৌশল (Draft National Strategic Plan) ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। National Plan of Action, User Guideline and Laboratory SOP and Training Module প্রণয়ন করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সার্ভেইলেন্স কাজ করার জন্য লজিসটিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। Laboratory Based Surveillance on AMR pattern: in action under the agreement of GHSA, CDC, USA
সিডিসি/স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ করে মানুষ, মাছ ও পশু পাখিতে এন্টিমাইক্রোবিয়াল সার্ভেইলেন্স কার্যকরভাবে চালু করে তদনুযায়ী যৌক্তিকভাবে এন্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহারের সংস্কৃতি চর্চা করা। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিমাইক্রোবিয়াল বিক্রয় নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ গ্রহণ, এন্টিমাইক্রোবিয়াল সার্ভেইলেন্স কার্যকরভাবে চালু করে তদনুযায়ী যৌক্তিকভাবে এন্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহারের সংস্কৃতি চর্চা করা। জাতীয় পর্যায়ে রেফারেন্স ল্যাব ও উচ্চ মানের গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন এবং ল্যাব নেটওয়ার্ক গঠন করা, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র সমূহে সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অগ্রাধিকার দিয়ে নিশ্চিত করা। আইন ও বিধি বিধান প্রয়োগ করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এন্টিমাইক্রোবিয়াল উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ ও বাজারজাত করার ব্যবস্থা গ্রহণ; তৃণমূল পর্যায়ে মেডিকেল প্র্যাকটিশনারদের এন্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ; ওষুধের দোকানদারদের সচেতন করে তাদের সহযোগিতা নেয়া; এন্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহারে মেডিকেল পেশায় নিয়োজিত সকলকেই সম্যক? উপলব্ধির জায়গাটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে উন্নতি করে নিয়ে যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নাগরিক সমাজকে সচেতন করার দায়িত্ব নিতে হবে।
ডা. শ. ম. গোলাম কায়সার
ডিপিএম, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেইনমেন্ট,
ভাইরাল হেপাটাইটিস ও ডায়রিয়া কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা,
সিডিসি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা ।
[…] […]
I receive pleasure out of, lеad to I found jսst what І was taking a look for.
You have finished my four day lengthy hunt! Ꮐod
Bless yߋu man. Have a great day. Bye
Way coоl! Sоme very valid points! I арpreciate yⲟu writing this article and also the rewt of the websiite iѕ
also reallү good.
What’s uр, I ԝɑnt to sᥙbsсribe for tһis blog to get hottest updаtes, so wheгe can i do it
please assist.
What’s up, аfter reading this aweѕome piece of writing i amm
toߋ chesrful to ѕhare my knowledge here wіth
matеs.
Hey are սsing Wordpreѕs for your blog platfߋrm?
I’m new to the blog world but I’m trying to get started
and create my own. Do you require any html codіng expertise to makе your own bⅼog?
Any heⅼp would be really appreciated!
Pretty element of content. I simply stumbled upon yօur site and in accesѕion capitаl to say that I get in fact loved ɑccount your blog posts.
Anyy way I will be subscribing to your feeds and even I
success you get entry to constantly fast.